কুষ্টিয়ায় ঘোষণা দিয়ে নববধূকে গণধর্ষণ

Post Image

কুষ্টিয়ার খোকসায় ঘোষণা দিয়ে নববধূকে অপহরণের পর দলবেধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণের তিন দিন পর সংজ্ঞাহীন গৃহবধূকে বাবার বাড়িতে ফেলে গেছে অপহরণকারী চক্র।

কুষ্টিয়ার খোকসায় অপহরণের তিন দিন পর সজ্ঞাহীন অবস্থায় গৃহবধূকে বাবার বাড়িতে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। ওই নববধূকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের রমানাথ পুর গ্রামের হাবিবর রহমান শেখের ছেলে রাজমিস্ত্রী দবির শেখ ও তার সঙ্গীরা কোমরভোগ পশ্চিমপাড়ার এক কৃষক কন্যাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল। স্থানীয় নেতাদের কাছে বিচার চেয়ে প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে কিছু দিন আগে পাশের গ্রামে মেয়েকে বিয়ে দেন।

শনিবার সকালে ওই নববধূ বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যাচ্ছিল। এসময় পথিমধ্যে দবির ও তার সঙ্গীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার তিন দিন পর সোমবার সকালে অপহরণ কারীরা একটি মোটর সাইকেলে করে গৃহবধূকে তার বাবার বাড়ি ফেলে রেখে যায়। পরিবারের লোকেরা গুরুতর অসুস্থ ওই গৃহবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। পরে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড কারা হয়।

গৃহবধূর চাচা বাংলা'কে জানান, বাড়ির ঘর তোলার কাজে গিয়ে রাজমিস্ত্রি দবির ওই কিশোরীকে (বর্তমান গৃহবধূ) বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। এতে মেয়ের পরিবার রাজি না হওয়ায় তাকে চরম ভাবে উত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়। এতেও রক্ষা হলো না। প্রথম থেকে তারা প্রভাবশালী রাজমিস্ত্র দবিরের বিরুদ্ধে গ্রামের নেতাদের কাছে বিচার চেয়ে ছিল। কিন্তু বিচার পায়নি।

দবির তার ঘোষণা অনুযায়ী মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূর পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানালেন, ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সাবিনা পারভিন।

তিনি বলেন, প্রভারশালী রাজমিস্ত্রী দবির ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ঘোষণা দিয়ে এই নববধূকে অপহরণ করে গণ ধর্ষনের পর বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আশরাফুল আলম  জানান, গৃহবধূর শারীরক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। গৃহবধূর মেডিকেল করার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক তাপস কুমার পাল জানান, এমন অভিযোগে এক গৃহবধূ গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমি ছুটিতে আছি তাই বিস্তারিত বলতে পারছি না।

সরজমিনে গিয়ে কর্তব্যরত ওয়ার্ডের সেবিকার কাছ থেকে জানা যায়, জেনারেল হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডের ভর্তি হয়েছেন নববধূ। তার সাথে রয়েছেন তার মা। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ঐ নববধূর মার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা একটু দাঁড়ান। মেয়েকে নিয়ে পরীক্ষা করতে এসেছি।

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) তালুকদার আসাদুজ্জামান জানান, তিনি ধর্ষিতার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু মেয়েটি খুবই অসুস্থ্য থাকায় তিনি কথা বলতে পারেনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা দায়েরের সংবাদ পাওয়া যায়নি।