মধ্যবিত্তের জন্য ৭০ হাজার ফ্ল্যাট বাজেটে

Post Image

আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার মধ্যবিত্তদের জন্য আগামী অর্থবছরে ৬৯ হাজার ৯৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। একই সঙ্গে রাজধানীর আশপাশে ৪টি ও পদ্মা সেতুর উভয় পাশে নতুন শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে। 

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০২১-২০২২ সালের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ ঘোষণা দেন।

বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ৫৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। আর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের আওতায় ৬০ হাজার ফ্ল্যাট এবং উত্তরায় তৃতীয় প্রকল্পে ৮ হাজার ৪০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপে (পিপিপি) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) তত্ত্বাবধানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। 

আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৬৭২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ প্রত্যয়নকে সামনে রেখে সরকার দেশের সব ভূমিহীন ও আশ্রয়হীন প্রান্তিক মানুষের আবাসন সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ নীতিমালার আওতায় মুজিববর্ষে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক প্রতিটি পরিবারকে একটি করে সেমিপাকা গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ৩৯৪ বর্গফুট আয়তনের দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি ঘরে একটি করে টয়লেট, রান্নাঘর ও বারান্দা থাকছে। 

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সারা দেশে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৩টি গৃহনির্মাণ করা হয়েছে। ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বর্তমান সরকারের সময়ে জলবায়ু উদ্বাস্তু ৩৭ হাজার ২৫৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আরও ১ হাজার ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

আরও বলা হয়, আধুনিক ও বাসযোগ্য নগর গড়ে তুলতে রাজউকের আওতাধীন এলাকার জন্য ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রণয়ন করা হচ্ছে। একইভাবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের অন্য বড় শহরগুলোয়ও একই আদলে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে। এতে পয়ঃনিষ্কাশনের উন্নয়ন, জলাবদ্ধতার নিরসন, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন, পরিবেশ-প্রতিবেশের দূষণ হ্রাসসহ নাগরিক জীবনমানের উন্নতি ঘটবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং ঢাকার চারপাশের বর্ধিষ্ণুতা বিবেচনায় চারটি স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একইভাবে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উভয় প্রান্তে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।